সংক্ষেপে শ্রীমতী রাধা রাণীর মানভঞ্জন
একদিন শ্রীমতি রাধা
তার
সখীদের
সাথে
যমুনায় স্নান
করছিলেন। সেই
সময়,
শ্রীকৃষ্ণ বাঁশি
বাজিয়ে ঈশারা
করলেন
যে
শ্রীকৃষ্ণ রাতে
রাধা
রানির
কুঞ্জ-এ (ফুলের আসর)
আসবেন।
রাধা
রানী,
তাঁর
সখিসহ
আনন্দে
অস্থির
হয়ে
উঠলেন।
সমস্ত
সখীরা
সারা
দিন
ধরে
কুঞ্জকে (ফুলের
ঘর)
বিভিন্ন ফুল
দিয়ে
সজ্জিত
করলেন
কারণ
তাদের
প্রিয়জন রাতে
আসবেন।
এদিকে, রাতের অর্ধেক পার হয়ে ভোর হয়ে এল, কিন্তু কৃষ্ণ আসলেন না, রাধারানী অধৈর্য হয়ে উঠলেন। শ্রীমতী বৃন্দাকে কৃষ্ণের সংবাদ আনতে আদেশ করলেন। খুব শীঘ্রই, বৃন্দাদেবী খোঁজ নিয়ে বললেন যে কৃষ্ণ সারা রাত চন্দ্রাবলির কুঞ্জে (ফুলের আসর) ছিলেন, তিনি এখানে কীভাবে আসবেন ? এই কথা শুনে শ্রীমতী মন খারাপ হয়ে গেল কিন্তু রেগে উঠলেন না। সূর্যোদয়ের ঠিক আগে ঘুম চোখে শ্রীকৃষ্ণ শ্রীমতী রাধা রানীর কুঞ্জে হাজির হলেন। কৃষ্ণকে দেখে রাধারানী রাগান্বিত হন এবং তিনি কোনওভাবেই শ্রীকৃষ্ণকে তাঁর কুঞ্জে রাখতে চাননি। এই সময়ে, শ্রী কৃষ্ণ রাধারারীর ক্রোধ ভাঙাতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। অবশেষে, কৃষ্ণ শ্রীমতি রাধার পাদপদ্মে ক্ষমা চেয়ে তাঁর মানভঞ্জন করেছিলেন ।
শ্রীমতী রাধারানির ক্রোধের কারণ
সাধারণভাবে, আমরা
ভাবতেই
পারি
যে,
শ্রীমতি রাধা
রাগ
করেছিলেন কারণ
কৃষ্ণ
চন্দ্রাবলির কুঞ্জে
গিয়েছিলেন। তবে
রাধা
রানী
ভাল
করেই
জানতেন
যে
শ্রীকৃষ্ণ সকলের
স্বামী
(কারণ
তিঁনি
জগৎস্বামী) এবং
তাঁকে
গ্রহণ
করার
প্রত্যেকেরই অধিকার
আছে।
সকলেই
তাঁকে
রাসলীলাতে পেলেও
কোনো
সখীর
ওপর
শ্রীমতি রাধারানী কখনও
রাগ
করেনি।
তাহলে
রাধারানী এবার
কেন
রেগে
গেলেন
?
আসলে, শ্রী কৃষ্ণ এসে দাঁড়ালে রাধা রানী কৃষ্ণের শরীরে ক্ষতচিহ্ন দেখতে পেলেন। মিলনে পাগল হওয়ার সময় চন্দ্রাবলী শ্রীকৃষ্ণের দেহে তাঁর নখ দিয়ে আঘাত করেছিলেন। রাধারানীসহ গোপীরা শ্রীকৃষ্ণকে ফুলের মতন সযত্নে রাখতেন, তিনি যখন হাঁটেন তখন তাঁর পায়ে যাতে আঘাত না লাগে, আমরা তাকে আমাদের বুক পেতে দেই । সেই কৃষ্ণকে চন্দ্রাবলি আঘাত করল ? যিনি কৃষ্ণ সেবা জানেন না, কৃষ্ণ কেন তাঁর কাছে গেলেন? রাধারানীর রাগের মূল কারণ এটিই। সুতরাং, রাধারানির অনুমতি ব্যতীত ভগবান কৃষ্ণকে পাওয়া সম্ভব নয়, কারণ কীভাবে শ্রী কৃষ্ণের সেবা দিতে হয় তা একমাত্র শ্রীমতি একাই জানেন।
No comments:
Post a Comment